৭নং আমজানখো ইউপি
মৈষাল ভাইয়ের মহিষের গাড়ি একসময়ের একমাত্র পথ চলার বাহন হলেও এখন আর দেখতে পাওয়া যায় না। ঢাকা থেকে সড়ক পথে বিলাসবহুল বাসযোগে সরাসরি বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় খুব সহজেই পৌছানো যায়। সড়ক পথে ঢাকা থেকে বালিয়াডাঙ্গীর দুরত্ব প্রায় ৪৫০ কি.মি। বিমানপথে সৈয়দপুরে পৌছে সড়ক পথে এবং রেলযোগে সৈয়দপুর অথবা দিনাজপুর পৌঁছে সড়কপথে বালিয়াডাঙ্গী নির্বিঘ্নে পৌছানো যায়। ঢাকা থেকে সরাসরি এশিয়ান হাইওয়ে বালিয়াডাঙ্গী পর্যমত্ম বিসত্মৃত রয়েছে। বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় অধিকাংশ মূল সড়ক পাকা হলেও আনাচে কানাচে কাচা সড়ক পরিলক্ষিত হয়। বেলে মাটি হওয়ায় বর্ষার মৌসুমেও কাচা সড়ক চলাচলের উপযোগী থাকে। বালিয়াডাংগী হযে ডাংগী বাজার দিয়ে/লাহিড়ী বাজার দিয়ে/চৌরাস্তা দিয়ে ভ্যান, বাস, মিশুক, দিয়ে এই ২০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী সুর্যপুরী আম গাছ পরিদর্শন করা যাবে।
এশিয়ার বৃহত্তম ঐতিহ্যবাহী প্রচীন লতা সূর্যপুরী আম গাছ
অবস্থানঃ গ্রামঃ মন্ডুমালা, ব্লকঃ হরিণমারী, উপজেলাঃ বালিয়াডাঙ্গী, জেলাঃ ঠাকুরগাঁও।
জাতের নামঃ সূর্যপুরী
বৈজ্ঞানিক নামঃ Mangifera indica (ম্যাঙ্গিফেরা ইন্ডিকা)
গাছের বয়সঃ আনুমানিক 220 (দুইশত কুড়ি বছর) |
বর্তমানে চতুর্থ প্রজন্ম গাছটির স্বত্ত্বাধিকারী।
গাছের বৈশিষ্ট: সূর্যপুরী জাতের লতানো বিশাল আকৃতির আম গাছটি প্রায় দুই বিঘারও বেশি জায়গা জুড়ে বিস্তৃত। দূর থেকে দেখলে সবুজ টিলার মত মনে হয়। আম গাছটির উচ্চতা ৭০ ফুট, এবং প্রশস্ত 19.8 ফুট Ges পরিধি 515 ফুট। মোট ১৯ টি মোটা ডাল গাছটির প্রধান কান্ড থেকে বের হয়ে অক্টোপাসের মত মাটি আঁকড়ে ধরেছে, যা গাছটিকে এক বৈচিত্রময় বৈশিষ্ট্য দান করেছে। প্রত্যেক ডালগুলো প্রধান কান্ড থেকে দূরে গিয়ে মাটিতে নুয়ে পড়ে নতুন শিকড়ের জন্ম দিয়েছে, যা একেকটি স্বতন্ত্র বৃক্ষের মত মনে হয়। অক্টোপাসেরর মত বের হওয়া, মাটিতে শায়িত প্র্রত্যেক ডাল থেকে শিকড় বের হওয়া গাছটির আরও কয়েকশত বছর বেঁচে থাকার ইঙ্গিত বহন করে ।
আমের বৈশিষ্ট: আমটি ছোট,মাঝারি আকারের Ges প্রতিটি আমের ওজন প্রায় 140-160 গ্রাম হয়ে থাকে| হালকা শাসঁযুক্ত হলেও আমটি খেতে বেশ সুস্বাদু, রসালো, সুগন্ধিযুক্ত Ges পাতলা খোসা ও ছোট্ট আঁটি । এ সকল বৈশিষ্ট আমটিকে বিশেষ মযার্দা দান করেছে। এই আমের খাদ্যাংশ 56 শতাংশ এবং মিষ্টিতা 17 শতাংশ। সাধারণত জুন মাসের শেষ হতে আম পাকা শুরু করে এবং জুলাই এর শেষ পযর্ন্ত আম পাওয়া যায়। অধিক জনপ্রিয়তার কারণে এই সূর্যপুরী আমকে ঘিরেই ঠাকুরগাঁও জেলার ব্রান্ডিংও করা হয়েছে ।
ফলনঃ বছর ভেদে প্রায় ১০০-১২০ মণ আম ধরে। গাছের বয়স বেশি হলেও ফলনে তেমন কোন তারতম্য ঘটেনি।
প্রথম দেখাতে বটগাছের মত বিশাল আকৃতি দেখে অনেকেই ভুল করে বসেন। বট গাছের মত বিশাল আকৃতি হলেও গাছটি আসলে বট গাছ নয়, এটি একটি আমগাছ। ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার হরিণমারী সীমান্তে মন্ডুমালা গ্রামে আমগাছটি প্রকৃতির আপন খেয়ালে বেড়ে উঠে আজ ইতিহাস হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। শুধু ঠাকুরগাঁওয়ের মানুষের কাছে নয়, এই আমগাছটি এখন বিস্ময় হয়ে দাঁড়িয়েছে গোটা দেশে । গাছের মূল থেকে ডালপালাকে আলাদা করে দেখতে চাইলে রীতিমত ভাবতে হয়। আমগাছটির ব্যতিক্রমী বৈশিষ্ট্য শুধু দেশের পর্যটক নয়, বিদেশের অনেক অতিথিকেও আকৃষ্ট করে। শত ব্যস্ততার মধ্যে একটু সময় করে ছুটে গিয়ে চোখ জুড়ানোর লোভ সামলাতে পারেন না তারা। ব্যতিক্রমী এই আমগাছ পশ্চাৎপদ বালিয়াডাঙ্গী উপজেলাকে বিশ্বের কাছে আজ পরিচিত করে তুলেছে।
সূর্যপুরী ঠাকুরগাঁও এর মানুষের প্রিয় একটি আমের জাত। সুস্বাদু, সুগন্ধী, রসালো আর ছোট আটি জাতটির অন্যতম বৈশিষ্ট্য । সেই সূর্যপুরী জাতের লতা বোম্বাই জাতীয় লতানো বিশাল আকৃতির আমগাছটি দাঁড়িয়ে আছে প্রায় দুই বিঘারও বেশী জায়গা জুড়ে। উচ্চতা আনুমানিক ৮০-৯০ ফুট। আর পরিধি ৩৫ ফুটের কম নয়। মুল গাছের ০৩ দিকে ১৯টি মোটা মোটা ডালপালা বেড় হয়ে অক্টোপাসের মত মাটি আঁকড়ে ধরেছে। বয়সের ভারে গাছের ডালপালা গুলো নুয়ে পড়লেও গাছটির শীর্ষভাগে সবুজের সমারোহ, সবুজ আমে টইটম্বুর। আমগুলোর ওজন ২০০ গ্রাম থেকে ২৫০ গ্রাম।
স্থানীয়দের কাছে এই আমগাছের ইতিহাস অনেক পুরোনো। মাটি আঁকড়ে থাকা মোটা ডালপালা গুলো দেখে অনেকেই গাছটির বয়স অনুমান করতে চেষ্টা করেন। কেউ বলেন ১৫০ বছর, আবার কেউ বলেন ২৫০ বছর। তবে এলাকার বায়োজোষ্ঠ্যরাও গাছটির বয়স কত তার সঠিক ভাবে বলতে পারেন না। তাঁরা বলেন কোন সময় আমগাছটি লাগানো হয়েছে তা জানা নেই। প্রাচীন এই গাছটি সম্পর্কে তারা জেনেছেন তাঁদের বাপ-দাদার কাছ থেকে। তারা আরো জানান, এই আমগাছের চারা থেকে পাশে কয়েকটি গাছ লাগানো হয়েছিলো। ১৫ বছর পর সেটাও একই ভাবে ডালপালা মাটির দিকে নুয়ে পড়ছে। ১৫ বছর আগে লাগানো আমগাছটির আকৃতি দেখে সহজেই মূল গাছটির বয়স অনুমান করা যায়, গাছটির বয়স ২০০ বছরের কম নয়।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস